তুরস্কের দীর্ঘদিনের নেতা রেচেপ তাইয়েপ এরদোয়ান দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন।
দেশটির নির্বাচন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে মি: এরদোয়ান ‘নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা’ পেয়েছেন।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, যে ৯৯ শতাংশ ভোট গণনা করা হয়েছে সেখানে মি: এরদোয়ান ৫৩ শতাংশ ভোট এবং তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মুহাররম ইঞ্জে পেয়েছেন ৩১ শতাংশ ভোট।
বিরোধী রাজনৈতিক দল এখনো নির্বাচনে তাঁদের পরাজয় স্বীকার করেনি।
তবে তারা জানিয়েছে, ফলাফল যাই হোক না কেন তারা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে যাবে।
এর আগে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে ভোটের যে ফলাফল ঘোষণা করা হচ্ছিল সেটি নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছিল বিরোধী রাজনৈতিক দল। চূড়ান্ত ফলাফল শুক্রবার প্রকাশ করা হবে।
রোববার একই দিনে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তুরস্কে।
মি: এরদোয়ান বলেছেন, তাঁর দল এ কে পার্টি সংসদেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে।
তিনি বলেন, “পুরো বিশ্বকে গণতন্ত্রের শিক্ষা দিয়েছে তুরস্ক।”
নির্বাচনের পরে তুরস্কে যে নতুন সংবিধান বলবত হতে যাচ্ছে সেখানে প্রেসিডেন্টের হাতে ব্যাপক ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদুলু জানিয়েছে সংসদ নির্বাচনে যে ৯৬ শতাংশ ভোট গণনা করা হয়েছে সেখানে মি: এরদোয়ানের একে পার্টি পেয়েছে ৪২ শতাংশ ভোট এবং তাদের দলে প্রতিন্দ্বদ্বী সিএইচপি পেয়েছে ২৩ শতাংশ ভোট।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী ৮৭ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছে।
মি: এরদোয়ান বলেন, ” আমি আশা করি নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কেউ নেতিবাচক কিছু করার চেষ্টা করবে না।”
বিভিন্ন খবরে জানা যাচ্ছে যে সিএইচপি দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মুহাররম ইঞ্জে তাঁর পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন। কিন্তু বিষয়টি সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার কথা থাকলেও মি: এরদোয়ান আগাম নির্বাচন দিয়েছেন।
এ নির্বাচনের পর মি: এরদোয়ান নতুন সংবিধান অনুযায়ী দেশ শাসন করবেন। নতুন সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর পদ বাতিল করা হবে এবং প্রেসিডেন্ট হবেন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় মি: এরদোয়ানের বিরুদ্ধে তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ মুহাররম ইঞ্জে অভিযোগ করেন যে তিনি কর্তৃত্ববাদী শাসন চালাচ্ছেন।
মি: এরদোয়ানের দল একে পার্টির মূল ভিত্তি হচ্ছে ইসলাম। অন্যদিকে, মি: ইঞ্জের দল মধ্য-বামপন্থী।
তুরস্কের নির্বাচনে প্রধান ইস্যু ছিল দেশটির অর্থনীতি। তুরস্কের মুদ্রা লিরার ব্যাপক দরপতন হয়েছে এবং দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১১ শতাংশে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল সন্ত্রাসবাদ। কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট গ্রুপের হুমকি মোকাবেলা করাও তুরস্কের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সংবাদদাতারা বলছেন, শেষ পর্যন্ত ভোটাররা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়েছিলেন।
একটি হচ্ছে কুর্দি এবং জাতীয়তাবাদীদের মধ্যে বিভক্তি এবং অপরটি হচ্ছে ধর্মীয় এবং ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির মাঝে বিভক্তি।
সূত্র, বিবিসি